ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনায় ধ্বংস
ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও গোয়েন্দা স্থাপনাগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা ‘ইরনা’ জানায়, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কমান্ড সেন্টার, গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান দপ্তর এবং একটি গোয়েন্দা শিবিরে সরাসরি আঘাত হানে ইরান।
আঘাতপ্রাপ্ত স্থানগুলো ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের শহর বিয়ের শেভায় অবস্থিত। ইরনা জানায়, ভোর থেকেই একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরানের সামরিক বাহিনী।
ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত: ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত ছিল নিখুঁত
ইরানের দাবি, এ ছিল একটি ‘নিখুঁত এবং টার্গেটেড’ আক্রমণ। হামলায় ব্যাপক ধ্বংস হয় কমান্ড সেন্টার ও গোয়েন্দা শিবিরে। ইরনার প্রতিবেদনে বলা হয়, গোয়েন্দা দপ্তরের পাশেই অবস্থিত সোরোকা হাসপাতালেও আংশিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যদিও সরাসরি আঘাত hospital-এ পড়েনি, তবে ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরণের শকওয়েভে জানালার কাঁচ ভেঙে যায় এবং কিছু যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়।
ইসরায়েলের অভিযান: অপারেশন দ্য রাইজিং লায়ন
এই পাল্টা আঘাতের সূত্রপাত ঘটে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে। গত ১৩ জুন ভোর সাড়ে ৪টায় ইরানে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনী (IAF)। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে “অপারেশন দ্য রাইজিং লায়ন”। ইসরায়েল দাবি করে, ইরান পরমাণু বোমা তৈরির চেষ্টা করছে, যার জবাবে তারা সামরিক অভিযান চালাতে বাধ্য হয়।
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৬০০ জনের বেশি নিহত ও ১,৩০০ জন আহত হয়েছেন।
ইরানের পাল্টা জবাব: অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি
ইসরায়েলের হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাল্টা অভিযান চালায় ইরান। তারা এই অভিযানের নাম দিয়েছে “অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি”। গত পাঁচ দিনে ইরান একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে এবং কিছু সীমান্ত অঞ্চলে ড্রোন ও কামান হামলাও হয়েছে।
ইসরায়েল এখনও তাদের পক্ষের হতাহতের তথ্য প্রকাশ করেনি, কিন্তু বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলোর মতে, হতাহতের সংখ্যা কয়েক ডজন ছাড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে নতুন যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে এবং এতে করে অন্য শক্তিশালী দেশগুলোরও জড়ানোর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
জাতিসংঘ ইতোমধ্যে উভয় দেশকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে।
ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে এবং এর প্রভাব গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
সূত্র : আলজাজিরা