যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য চুক্তিতে কী আছে?

যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য চুক্তিতে কী আছে

0 0

অনলাইন ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্ক যুদ্ধ শুরু করার পর প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি নিয়ে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, এটি কোনো পূর্ণাঙ্গ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নয়, বরং কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের উপর শুল্ক কমানো বা তুলে নেওয়া হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই চুক্তিকে ‘বড় বাণিজ্য চুক্তি’ বলে সামাজিক মাধ্যমে দাবি করলেও, বাস্তবে এটি একটি সীমিত পরিসরের সমঝোতা। চূড়ান্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে হলে মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন, যা এখনও হয়নি।

চুক্তিতে কী আছে তা একনজরে দেখে নেয়া যাক:

গাড়ির ওপর শুল্ক কমেছে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে যুক্তরাজ্যের গাড়ি শিল্প। চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের রপ্তানি করা গাড়ির ওপর ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশে নিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এই ছাড় শুধু প্রথম এক লাখ গাড়ির জন্য প্রযোজ্য। এই সংখ্যা ছাড়িয়ে গেলে পরবর্তী গাড়িপ্রতি ফের ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।

ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে শুল্ক মওকুফ যুক্তরাজ্য থেকে আমদানি করা ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক সম্পূর্ণভাবে তুলে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে লাভবান হবে ব্রিটিশ স্টিলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো। ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানিও এর আওতায় আসবে কিনা, তা এখনো পরিষ্কার নয়।

চুক্তিতে ফার্মাসিউটিক্যাল বা ঔষধ শিল্প নিয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এই খাতে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন পাউন্ড, যা রপ্তানিতে দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত।
ডিজিটাল সার্ভিসেস ট্যাক্স অপরিবর্তিত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর যুক্তরাজ্যের ২ শতাংশ ডিজিটাল সার্ভিসেস ট্যাক্সের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এই কর গুগল, ফেসবুক, অ্যাপলের মতো মার্কিন টেক জায়ান্টদের ওপর প্রযোজ্য। প্রথম বছরেই এই খাত থেকে যুক্তরাজ্য সরকার প্রায় ৩৬০ মিলিয়ন পাউন্ড কর আদায় করেছে।

কৃষিপণ্য

যুক্তরাজ্য কিছু মার্কিন কৃষিপণ্যের শুল্ক তুলে নিলেও, খাদ্য নিরাপত্তা ও গুণমানের বিষয়ে কোনো আপস করেনি।

বিশেষ করে গ্রোথ হরমোন ব্যবহার করে উৎপাদিত মার্কিন গরুর মাংস এখনো নিষিদ্ধ। তবে ব্রিটিশ কৃষকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ১৩,০০০ মেট্রিক টন রপ্তানির কোটা নির্ধারণ করেছে।
বিমান ও ইঞ্জিন রপ্তানিতে ছাড়

রোলস রয়েসের ইঞ্জিন ও বিমানের যন্ত্রাংশ এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্ত রপ্তানি করতে পারবে ব্রিটিশরা। পাশাপাশি যুক্তরাজ্যও যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০ বিলিয়ন ডলারের বোয়িং বিমান কিনবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।

এই সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে কিছু খাতে সাময়িক শুল্কছাড় দেওয়া হলেও, পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য চুক্তি অর্জনের পথ এখনও সময় সাপেক্ষ। আইনি প্রক্রিয়া ও আনুষ্ঠানিক আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত বিষয়গুলো সামনের দিনে ঠিক করে নিতে পারে এই দুই অর্থনৈতিক পরাশক্তি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.