স্কুলে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

স্কুলে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

0 1

জেলা প্রতিনিধি : বাড়িতে বা অন্যান্য জায়গায় ভালো থাকলেও বিদ্যালয়ে ঢোকার কিছুক্ষণ পর হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টরা। এভাবেই গত দুই দিনে একজন শিক্ষক, গ্রন্থাগারিক, শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৫০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

সোমবার (১৯ মে) সকালে পাবনার বেড়া উপজেলার কাজিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৪০-৪৫ জন অসুস্থ হয়। এর আগে গত রবিবার অসুস্থ হয় আরো ৬-৭ শিক্ষার্থী।

এ তালিকায় রয়েছেন শিক্ষক ও গ্রন্থাগারিকও। এ ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেশির ভাগ শিক্ষার্থী সোমবার অসুস্থ হলেও ঘটনাটি প্রথম দেখা যায় গত রবিবার।

ওইদিন (১৮ মে) দুপুর দুটার দিকে ৬-৭ জন ছাত্রী হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে কয়েকজন জ্ঞানও হারিয়ে ফেলে। পরে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এদিনের এ ঘটনাকে শিক্ষক-অভিভাবকরা অনেকটা স্বাভাবিক হিসেবেই নেন।
তবে সোমবারের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তারা। এদিন সকালে ক্লাস শুরু হওয়ার আগে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের আঙিনায় ঢোকার পর একই রকম অসুস্থতা বোধ করতে থাকেন।
এক পর্যায়ে অ্যাসেম্বলি শুরু হলে কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। ভয়ে অন্য শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে দৌড়ে ঢুকলে সেখানেও গণহারে তারা অসুস্থ হতে থাকে। তাদের বেশির ভাগই এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

এভাবে শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৪০ জন অসুস্থ হয়ে পড়লে শিক্ষক ও সুস্থ থাকা শিক্ষার্থীরা দৌড়ে গিয়ে তাদের মাথায় পানি ঢালতে থাকে। খবর পেয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে ছুটে আসেন এবং তাদের বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে চিকিৎসা দেন।
প্রাথমিক চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া খাতুন বলে, ‘ক্লাসে ঢোকার পর মাথা ঘুরতে থাকে ও বমি বমি লাগে। এক পর্যায়ে বেশ কিছুক্ষণের জন্য জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এখন কিছুটা ভালো লাগছে।’

অভিভাবক আছিয়া খাতুন বলেন, ‘ছেলের অসুস্থতার কথা শোনা মাত্র আমি স্কুলে আসি। এখানে কিছু সময় থাকার পর আমার নিজেরই কেমন যেন অস্থির লাগতে শুরু করে। এতে আমার মনে হয় এখানে অজ্ঞান হওয়ার মত কোন মেডিসিন বা এরকম কিছু ছিটানো ছিল। কেমন যেন একটা গন্ধ নাকে আসে। একারণেই হয়তো বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আমার ছেলে এখন অনেটাই সুস্থ আছে।’

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘রবিবারের ঘটনায় আমরা ভেবেছিলাম হয়তো ওই শিক্ষার্থীরা না খেয়ে আসায় দুর্বল হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কিন্তু সোমবারের ঘটনায় আমরা অনেকটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। ঠিক কী কারণে এমন হচ্ছে সে ব্যাপারে আমাদের কোনো ধারণা নেই। তবে ইতোমধ্যে অনেক শিক্ষার্থী অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছে, এটিই আমাদের জন্য স্বস্তির বিষয়।’

বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, তাহমিনা সুলতানা নিলা বলেন, ‘ভ্যাপসা গরম অথবা ফুড পয়জনিং কারণে অচেতন হয়ে থাকতে পারে। তবে পরীক্ষা না করে সঠিকভাবে কিছুই বলা সম্ভব নয়।’

বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোরশেদুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুলের শিক্ষার্থীদের অচেতন হয়ে পড়ার বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। প্রধান শিক্ষককে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.