অনলাইন ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড একই সময়ে এবং একই সঙ্গে শান্তির কথা বলেন বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। তার এই প্রবণতা অনেক সময় বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে বলেও মনে করেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার রাজধানী তেহরানে এক অনুষ্ঠানে পেজেশকিয়ান বলেন, “তিনি একই সময়ে, একই সঙ্গে শান্তির পক্ষে কথা বলেন, আবার সবচেয়ে আধুনিক অস্ত্র দিয়ে বহু মানুষকে হত্যার হুমকি দেন। আমরা কোনটা বিশ্বাস করব?”
তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের হুমকিকে ভয় পায়না বলে ঘোষণা করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট। তবে পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু প্রকল্প বিষয়ক সংলাপ চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক বলেও জানিয়েছেন তিনি।
“আমরা যুদ্ধ চাই না এবং এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যেতে চাই”, বলেন পেজেশকিয়ান।
প্রসঙ্গত, ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে গত বেশ কয়েক বছর ধরে ব্যাপক অস্বস্তিতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ ওয়াশিংটনের অভিযোগ— ইরানের পরমাণু প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য পারমাণবিক বোমা বানানো। দেশটিকে এই কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ‘জ্যাকোপা’ নামে একটি চুক্তি করেছিলেন। তবে তার উত্তরসূরী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ সালে তার প্রথম শাসন মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তি থেকে সরিয়ে নেন।
ফলে চুক্তিটি অকার্যকর হয়ে যায় এবং ইরানও তার পরমাণু প্রকল্পে মনোনিবেশ করে। গত কয়েক বছরে পারমাণবিক বোমার প্রধান উপকরণ ইউরেনিয়ামের মজুতও সমৃদ্ধ করেছে দেশটি। গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে পরমাণু শক্তির ব্যবহার পর্যবেক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) জানিয়েছিল, ইরান ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করছে। যদি এই ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা ৯০ শতাংশে উন্নীত করা হয়, সেক্ষেত্রে অনায়াসে এই ইউরেনিয়াম ব্যবহার করে অন্তত ৬টি পরমাণু বোমা বানানো সম্ভব।
আইআইএ-এর এই তথ্যে পর সচেতন হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন। ট্রাম্প নিজে ইরানের সঙ্গে সরাসরি সংলাপের আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি দেন। ইরানের সরকারও তাতে সাড়া দেয়। ইরানের চাওয়া অনুযায়ী ওমানের মধ্যস্থতায় ওয়াশিংটনের সঙ্গে সংলাপ শুরু হয়েছে ইরানের।
শুক্রবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে সংলাপের সাফল্য প্রত্যাশা করেছেন ট্রাম্প। সাংবাদিকদের এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “আমি আশা করছি সংলাপ সফল হবে। কারণ তারা জানে যে যদি এটি সফল না হয়, তাহলে খুব, খুব খারাপ কিছু ঘটবে।”