ঢাকাশুক্রবার , ৩১শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  1. English Version
  2. অন্যান্য
  3. অপরাধ
  4. অর্থনীতি
  5. আইন-আদালত
  6. আবহাওয়া
  7. আর্ন্তজাতিক
  8. ঈদ
  9. উপ-সম্পদকীয়
  10. করোনা ভাইরাস আপডেট
  11. খুলনা
  12. খেলাধুলা
  13. চট্টগ্রাম
  14. চাকরীর খবর
  15. জনদূর্ভোগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ট্রাম্পের জন্য বলরুম বানাতে ভাঙা হচ্ছে হোয়াইট হাউসের একাংশ

News Editor
অক্টোবর ২১, ২০২৫ ৯:৩৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য নতুন বলরুমের নির্মাণকাজ শুরু হওয়ায় হোয়াইট হাউসের ইস্ট উইংয়ের কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে।

সোমবার ইস্ট উইংয়ের একটি ঢেকে দেওয়া প্রবেশপথ এবং জানালার বিশাল অংশ ভেঙে ফেলেন নির্মাণকর্মীরা, যেখানে ‘সম্পূর্ণ আধুনিকীকরণ’ করা হবে বলে জানিয়েছিলেন ট্রাম্প।

এর আগে প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, ২৫০ মিলিয়ন (২৫ কোটি) ডলার খরচ করে হোয়াইট হাউসে যে বলরুম সংযোজন করা হবে সেটি বিদ্যমান কাঠামোর ‘কাছাকাছি’ হবে, তেমন কোনো পরিবর্তন আনা হবে না।

গত জুলাইয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, “বিদ্যমান ভবনে কোনো হস্তক্ষেপ করা হবে না। এটি হবে না। এটি এর কাছাকাছেই থাকবে, কিন্তু স্পর্শ করবে না এবং বিদ্যমান ভবনের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা জানাই, যেটির আমি সবচেয়ে বড় ভক্ত। এটি আমার প্রিয়। এটি আমার প্রিয় জায়গা, আমি এটি পছন্দ করি।”

ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া একটি পোস্টে এই নির্মাণ কাজের ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, “অত্যন্ত প্রয়োজনীয়” বলরুমটি যেখানে করা হচ্ছে সেখানকার “মাটি ভেঙে গেছে”। তিনি লিখেছেন, “১৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সব প্রেসিডেন্টই স্বপ্ন দেখেছেন হোয়াইট হাউসে একটি বলরুম থাকবে যেখানে জমকালো পার্টি, রাষ্ট্রীয় সফর ইত্যাদির জন্য লোকেদের ধারণ করার মতো ব্যবস্থা থাকবে।”

ট্রাম্প জানিয়েছেন, প্রকল্পটিতে “অনেক উদার দেশপ্রেমিক” ব্যক্তিগতভাবে অর্থায়ন করছেন। যদিও হোয়াইট হাউস নাম প্রকাশ না করায় কারা এখানে অর্থায়ন করছেন তাদের পরিচয় এখনো স্পষ্ট নয়।

গত দুই শতাব্দী ধরে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ঐতিহাসিক বাসভবন হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে হোয়াইট হাউস। ১৯০২ সালে নির্মিত হয়েছিল এই পূর্ব শাখাটি এবং সবশেষ ১৯৪২ সালে এটি সংস্কার করা হয়েছিল।

ভবনের দক্ষিণ দিক থেকে, ইস্ট উইংয়ের কাছে বেশ কয়েকটি বড় নির্মাণ সরঞ্জামের অংশবিশেষ এবং যন্ত্রপাতি দেখতে পেয়েছে বিবিসি। যার মধ্যে কিছু মার্কিন পতাকা দিয়ে সজ্জিত। ট্রাম্প তার পোস্টে লিখেছেন, ইস্ট উইংটি হোয়াইট হাউস থেকে “সম্পূর্ণ আলাদা” ছিল, যদিও এটি মূল কাঠামোর সাথে সংযুক্ত।

ইস্ট উইংয়ের দক্ষিণ দিকের প্রবেশপথের বেশিরভাগ অংশই এখন ঢেকে রাখা হয়েছে। সেখানকার স্থাপনাগুলো এরইমধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। কংক্রিটের ধ্বংসাবশেষ এবং ধাতব তারগুলো কয়েকশ মিটার দূর থেকেও স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে।

যদিও হোয়াইট হাউস এবং এর সংলগ্ন পার্কগুলো ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিস বা এনপিএস’র মাধ্যমে পরিচালিত হয়, তবে এক্ষেত্রে সংস্কার করার জন্য বিস্তৃত ক্ষমতা থাকে প্রেসিডেন্টের হাতে।

এনপিএসের সাবেক প্রধান ইতিহাসবিদ রবার্ট কে সাটন বিবিসিকে বলেন, হোয়াইট হাউস যখন নির্মাণাধীন থাকে তখন সাধারণ মানুষের মধ্যেও সবসময় উদ্বেগ থাকে। তিনি বলেন, “হোয়াইট হাউস তৈরির পর থেকে এর সাথে সম্পর্কিত যেকোনো বিষয় নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। হোয়াইট হাউসের উভয়শাখাই সমান ভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাদের উভয়েরই কার্যকারিতা রয়েছে।”

কিন্তু সাটন বলেন, তিনি চলমান নির্মাণকাজে ট্রাম্প প্রশাসনের স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি আরও জানতে চান, ভবনটির ঐতিহাসিক ধারা সংরক্ষণের জন্য হোয়াইট হাউস কর্তৃপক্ষ পরীক্ষিত নির্দেশিকা অনুসরণ করবে কি না।

তিনি বলেন, “এটিকে সর্বদা পিপলস হাউস বলা হয়ে আসছে। এই ভবনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী ভবন হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তবুও আমরা জানি না কী ঘটছে।”

সাটন বলছেন, নতুন বলরুমটিতে কতজন লোক ধরবে তার পরিসংখ্যান নিয়ে নানারকম হিসাব আসছে, ৬০০ থেকে ৯০০ এরও বেশি লোক ধরবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উদ্বেগের বিষয় হলো, ভবনটি মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাসস্থান এবং অত্যন্ত সুরক্ষিত। সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলা থেকে রক্ষা করার জন্য সেখানে অতিরিক্ত ব্যবস্থা রয়েছে।

হোয়াইট হাউস এই প্রকল্প সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রকাশ করেছে, যার মধ্যে এর আকারের ধারণা প্রদানকারী নকশাও রয়েছে। এর ভেতরের নতুন সাজসজ্জার অংশ হিসেবে শত শত সোনালী ঝাড়বাতি থাকার ধারণাও দেওয়া হয়েছে।

বলা হয়েছে, নির্মাণকাজ সেপ্টেম্বরে শুরু হবে এবং ট্রাম্প জাতীয় উদ্যান পরিষেবা ও মার্কিন সিক্রেট সার্ভিসের কর্মকর্তাদের সাথে প্রকল্পটি নিয়ে বৈঠক করেছেন।

ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, তারা ক্লার্ক কনস্ট্রাকশনকে প্রকল্পটির নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বেছে নিয়েছে, ম্যাকক্রি আর্কিটেক্টস এটি ডিজাইন করেছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, সিক্রেট সার্ভিস ভবনটিতে “প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং এ সংক্রান্ত পরিবর্তনে” সহায়তা করবে।

সাটন বলেন, এই ধরনের প্রকল্পগুলোর জন্য সাধারণত একটি বিস্তৃত পর্যালোচনা প্রক্রিয়া চালু থাকে যাতে যেকোনো পরিবর্তনের কার্যকারিতা নিশ্চিত করা যায় এবং হোয়াইট হাউস তার প্রতীকী চেহারা বজায় রাখে। প্রেসিডেন্ট পরিবর্তন হলেও প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই পরিবর্তনগুলো টিকে থাকে।

উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়াটিতে তাড়াহুড়ো করা হচ্ছে এবং দেশের ইতিহাসের পরিবর্তে ট্রাম্প ও তার চিন্তাভাবনার প্রতিফলন হচ্ছে। এটিকে (হোয়াইট হাউস) সর্বদা পিপলস হাউস বলা হয়ে আসছে।

ট্রাম্প এই বছর হোয়াইট হাউসে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করেছেন, যার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সোনালী সাজসজ্জা দিয়ে ওভাল অফিস পুনরায় সাজানো এবং টেবিল ও চেয়ার যুক্ত করার জন্য রোজ গার্ডেনের ঘাসের ওপর কংক্রিট দিয়ে প্রশস্ত পাটাতন তৈরির মতো কাজও রয়েছে।

ওবামা ও ট্রুম্যানসহ অন্য প্রেসিডেন্টরাও পরিবর্তন এনেছেন

হোয়াইট হাউসে নতুন এই সংস্কার প্রকল্পের সমালোচনা করেছে সোসাইটি অব আর্কিটেকচারাল হিস্টোরিয়ানস। আন্তর্জাতিক এই অলাভজনক গোষ্ঠীটি বিশ্বব্যাপী ঐতিহাসিক ভবন সংরক্ষণ নিয়ে গবেষণা করে।

গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, “প্রস্তাবিত বলরুম সংযোজন নিয়ে তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে”। তারা উল্লেখ করেছে, “গত ৮৩ বছরের মধ্যে এর বহির্ভাগে প্রথম বড় পরিবর্তন হবে (যেহেতু পূর্ব উইংটি তার বর্তমান আকারে ১৯৪২ সালে নির্মিত হয়েছিল)। অতএব, এই ঐতিহাসিক ভবনে এত গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে একটি কঠোর ও সুচিন্তিত নকশা এবং পর্যালোচনা প্রক্রিয়া অনুসরণ করা উচিত।”

আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টসও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং প্রকল্পটির স্বচ্ছ পর্যালোচনার আহ্বান জানিয়েছে। তবে ট্রাম্প অবশ্যই প্রথম প্রেসিডেন্ট নন যিনি ভবনটিতে তার ছাপ রেখে গেছেন।

ট্রাম্পের পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা হোয়াইট হাউস টেনিস কোর্টকে বাস্কেটবল খেলা আয়োজনের জন্য রূপান্তরিত করেছিলেন। রিচার্ড নিক্সনের আমলে বানানো সুইমিং পুলকে হোয়াইট হাউস প্রেস রুমে রূপান্তরিত করা হয়েছিল। এখনো নিয়মিত ব্রিফিং সেই ঘরে হয় যেখানে প্রেসিডেন্টরা একসময় সাঁতার কাটতেন।

ইনডোর পুলটি মূলত ১৯৩৩ সালে প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টের জন্য স্থাপন করা হয়েছিল। কারণ তিনি পোলিও রোগের কারণে নিয়মিত ব্যায়ামের জন্য সাঁতার কাটতেন। এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ১৯৭৫ সালে জেরাল্ড ফোর্ড বাইরে একটি পুল স্থাপন করেছিলেন।

এর আগে হ্যারি ট্রুম্যানের অধীনে সবচেয়ে বড় সংস্কারের কাজটি হয়েছিল। তিনি ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত হোয়াইট হাউসের সম্পূর্ণ ধ্বংস এবং পুনর্নির্মাণ দেখেছিলেন। বিস্তৃত প্রকল্পের সময় ট্রুম্যানকে হোয়াইট হাউস থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

ট্রাম্প

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন সূত্র থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।