আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ বেসামরিক ও শান্তিপূর্ণ খাতে পরমাণু শক্তি ব্যবহারের জন্য ইরানকে সহযোগিতা করতে চায় ওয়াশিংটন; আর সেই সহযোগিতার খাতিরে ইরানের বিধ্বস্ত পরমাণু প্রকল্পে ৩ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলেছে, চলতি জুনের শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং মধ্যপ্রাচ্যের মিত্র ও অংশীদার ও তেহরানের মধ্যে এ ইস্যুতে গোপনে এ ইস্যুতে আলোচনা চলছে। অর্থাৎ ইরান ও ইসরায়েলের সংঘাত শুরুর আগেই শুরু হয়েছিল এ সংক্রান্ত আলোচনা।
ট্রাম্প প্রশাসনের চার জন কর্মকর্তা এ ব্যাপরে সিএনএনের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় ইরান যেন তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে। অন্যদিকে তেহরান এই ব্যাপারটিকে নিজেদের রেডলাইন বলে ঘোষণা করেছে।
“কিন্তু আমরা এখনও আমাদের চাওয়া থেকে সরে যাইনি। ইরানের সঙ্গে আমরা একটা সমঝোতায় আসতে চাইছি এবং তা যেন সহজে হয়— সেজন্যই আমরা সেখানে বিনিয়োগ করতে চাই। আপাতত ২ হাজার থেকে ৩ হাজার ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই অর্থের একটি অংশ সরবরাহ করবে যুক্তরাষ্ট্র, বাকিটা আসবে মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের মিত্র ও অংশীদারদের কাছ থেকে”, সিএনএনকে বলেছেন ওই কর্মকর্তা।
ইরানকে সমঝোতার পথে আনতে পরমাণু প্রকল্প খাতে বিনিয়োগের পাশপাশি বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে ইরানের ফ্রিজড হিসাবগুলো খুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। বর্তমানে বিদেশি ব্যাংকগুলোতে ইরানের ৬০০ কোটি ডলার ফ্রোজেন অবস্থায় আছে। এছাড়া দেশটির তেল রপ্তানির ওপর যেসব নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন, সেসবও শিথিল করা হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
তবে এসব আকর্ষণীয় প্রস্তাবে সম্মত হয়ে ইরান শেষ পর্যন্ত সমঝোতায় আসতে রাজি হবে কি না— তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নয় ওয়াশিংটন। ট্রাম্প প্রশাসনের অপর এক কর্মকর্তা সিএনএনকে এ প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা আভাস-ইঙ্গিতে আমাদের প্রস্তাব ইরানকে দিয়েছি। তেহরান এখনও ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। আমরা আমদের চেষ্টা চালিয়ে যাব।”
প্রসঙ্গত, পরমাণু প্রকল্প নিয়ে গত মে মাস থেকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাচ্ছিল তেহরান। কিন্তু তার মধ্যেই ‘ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির দোরগোড়ায়’— অভিযোগ তুলে গত ১২ জুন তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে বিমান অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। এই হামলার জবাব দিতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা শুরু করে ইরানও।
উভয়পক্ষের সংঘাত প্রায় চরম পর্যায়ে ওঠার পর ২৩ জুন এতে প্রবেশ করে যুক্তরাষ্ট্র; ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় ব্যাপক হামলা চালায় মার্কিন বিমান বাহিনী। এই হামলার পরের দিন ইরান-ইসরায়েলে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
সূত্র : আরটি, সিএনএন

 
                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
								                                                                                     
                                     
                        
                         
                                     
                                 
                                 
                                 
                                