এখনও ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত হয়নি ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর (ডিআর কঙ্গো)। আফ্রিকান প্লে-অফের ফাইনালে তারা নাইজেরিয়াকে হারিয়ে সেই আশা বাঁচিয়ে রেখেছে। তবে ডিআর কঙ্গোকে পেরোতে হবে ইন্টারকন্টিনেন্টাল বাছাইপর্ব। তার আগে আফ্রিকান দেশটির বিরুদ্ধে ‘অবৈধ’ খেলোয়াড় খেলানোর অভিযোগ উঠেছে। নাইজেরিয়ার তোলা সেই অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নভঙ্গ হবে ডিআর কঙ্গো’র।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ফিফার কাছে ডিআর কঙ্গো খেলার অযোগ্য খেলোয়াড় নিয়ে আফ্রিকান প্লে-অফের ফাইনাল খেলার অভিযোগ তুলেছে নাইজেরিয়া। যা তাদের বিশ্বকাপ খেলার আশা দেখাচ্ছে। ওই ফাইনালে নাইজেরিয়াকে হারিয়ে ইন্টারকন্টিনেন্টাল বাছাইয়ে জায়গা করে নেয় ডিআর কঙ্গো। তবে প্রতিপক্ষ দলটির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলে নাইজেরিয়া ফুটবল ফেডারেশন (এনএফএফ) বলছে, অ্যারন ওয়েন-বিসাকা ও অ্যাক্সেল তুয়ানজেবেকে মরক্কোর বিপক্ষে খেলিয়েছে কঙ্গো, অথচ তাদের আইনে দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা খেলোয়াড় খেলার অযোগ্য।
এনএফএফ–এর সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মেদ সানুসি জানিয়েছেন, ‘আমাদের যুক্তি হচ্ছে ফিফাকে প্রতারিত করা হয়েছে। দ্য কঙ্গোলিজ বিধি (আইন) বলছে, আপনি দ্বৈত নাগরিক হতে পারবেন না। কিন্তু তাদের কয়েকজন খেলোয়াড়ের ইউরোপিয়ান এবং ফ্রেঞ্চ পাসপোর্ট আছে। যা আমরা ফিফার নীতিমালা লঙ্ঘন করছে বলে মনে করি। তাই আমরা বিষয়টিকে প্রতারণা হিসেবে অভিহিত করছি।’
এদিকে, এনএফএফ–এর এই চ্যালেঞ্জ প্রত্যাখ্যান করেছেন কঙ্গোলিজ ফুটবল ফেডারেশন (ফেকোফা)। তারা জানিয়েছে, ‘এমন অভিযোগ তোলার মাধ্যমে ওরা (নাইজেরিয়া) পেছনের দরজা দিয়ে জিততে চায়। বিশ্বকাপ অবশ্যই মর্যাদা এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলতে হবে। কোনো আইনবিদের কৌশলের ভিত্তিতে নয়।’ বিষয়টিকে ‘খারাপভাবে পরাজিত’ দলের স্পোর্টসম্যানশিপের ঘাটতি বলেও উল্লেখ করেছে কঙ্গো ফুটবল কর্তৃপক্ষ।
কঙ্গোর বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগের স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় তথ্যও ফিফার গভর্নিং বডির কাছে পাঠিয়েছে নাইজেরিয়া। এ নিয়ে যদিও বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থাটি এখনও পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। ফিফার নীতিমালায় একজন খেলোয়াড় যে দেশকে ফুটবলে প্রতিনিধিত্ব করতে চায় তার জন্য সেই সুযোগ রেখেছে। তবে এক্ষেত্রে ফিফার প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটির অনুমোদন নিতে হবে। সুযোগ রয়েছে প্রতিনিধিত্বকারী দেশ ও নিজের অবস্থান করা ভূখণ্ড মিলিয়ে দুটি পাসপোর্ট রাখারও। তবে কঙ্গোর আইনে দুটি পাসপোর্ট রাখার অনুমতি নেই।
এক্ষেত্রে যা ঘটতে পারে–
অভিযোগ নিষ্পত্তি : নাইজেরিয়ার দেওয়া তথ্যপ্রমাণ অপর্যাপ্ত উল্লেখ করে অভিযোগের ইতি টানতে পারে ফিফা। ফলে ডিআর কঙ্গোর বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন অক্ষত থাকবে।
তদন্ত ও প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা : ফিফা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করতে পারে এবং যদি তারা বিধি লঙ্ঘনের সুস্পষ্ট প্রমাণ পায়, তাহলে কঙ্গোর ফেডারেশনকে প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা (জরিমানা কিংবা সতর্কতা) দিতে পারে। এক্ষেত্রেও কঙ্গোর খেলতে বাধা থাকবে না।
খেলায় নিষেধাজ্ঞা : বিষয়টি খুব গুরুতর দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে ফিফা কিংবা আফ্রিকান ফুটবল কনফেডারেশন ম্যাচ বাজেয়াপ্ত কিংবা ইতোমধ্যে অনুষ্ঠিত খেলার পয়েন্ট কেটে নিতে পারে। তেমন কিছু হলে বিশ্বকাপ খেলা হুমকিতে পড়বে কঙ্গোর। মূলত, এমন নিষেধাজ্ঞা তখনই দেওয়া হয়, যখন প্রশাসনিকভাবে খেলোয়াড় নিবন্ধনের নিয়ম লঙ্ঘন হয়। বিষয়টিকে মিথ্যার আশ্রয় এবং ইচ্ছাকৃত ভুল উপস্থাপনা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
