পদ ছাড়ার পর একা হয়ে যাব, কেন বললেন প্রেস সচিব

পদ ছাড়ার পর একা হয়ে যাব, কেন বললেন প্রেস সচিব

0 0

অনলাইন ডেস্ক : শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের সময় যারা আমার প্রশংসা করতেন, তাদের মধ্যে কেউ কেউ এখন আমাকে আনফ্রেন্ড করে দিয়েছেন। আমার অনেক আত্মীয় ইতোমধ্যেই সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। আমার স্ত্রী সতর্ক করে দিয়েছেন যে, যখন আমি এই পদ ছেড়ে দেব, তখন আমি নিজেকে একা দেখতে পাব। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এমনটি লিখেছেন।

শনিবার ফেসবুক পোস্টে প্রেস সচিবের পদ ছাড়ার পর একা হয়ে পড়ার শঙ্কার কথা জানান শফিকুল আলম। তবে তাতে যে তার আক্ষেপ নেই, সেটাও জানিয়েছেন তিনি। কেননা তিনি বিশ্বাস করেন, যে দায়িত্ব তার ওপর; সেটা তিনি যথাযথভাবেই পালন করছেন। তাই যখন কয়েক মাস পর পদত্যাগ করবেন; তখন গর্বের সঙ্গেই পিছনে ফিরে তাকাতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি।

প্রেস সচিব তার পোস্টে লিখেছেন, ‘অনেক বছর আগে, শেখ হাসিনা স্বৈরশাসনের সময়, আমি প্রায়শই বিরোধী নেতাদের সম্পর্কে লিখতাম, যারা তার শাসনকে অমান্য করেছিলেন। আমাদের জাতির জন্য আশার আলো হিসেবে কাজ করেছিলেন। তাদের আত্মীয়স্বজনরা প্রায়শই সেই পোস্টগুলো শেয়ার করতেন এবং মাঝে মাঝে তারা আমাকে বার্তা পাঠাতেন। আমার লেখা এবং সাংবাদিকতার প্রশংসা করতেন।’

অন্তর্বর্তী সরকারে দায়িত্ব গ্রহণের পরের অবস্থা জানিয়ে শফিকুল আলম লিখেছেন, ‘এখন, অন্তর্বর্তী সরকারে একটি সংবেদনশীল ভূমিকা গ্রহণ করার পর, আমি লক্ষ্য করেছি এই ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কেউ আমাকে আনফ্রেন্ড করেছেন। আমি আর আগের মতো সেই ব্যক্তি নই। কারো কারো কাছে, আমি অহংকারী হয়ে উঠেছি – ভিন্নমতের প্রতি অসহিষ্ণু এক প্রেস কর্মকর্তা।’

এই অবস্থায় নিজের ভয়ের কথা জানিয়ে প্রেস সচিব লিখেছেন, ‘এই অবস্থায় আমি ভয় পাচ্ছি যে, আমি আমার সাংবাদিকতা ক্যারিয়ার জুড়ে তৈরি হওয়া অনেক ফেসবুক বন্ধুকে হারাতে পারি। আমার অনেক আত্মীয় ইতোমধ্যেই সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলেছেন। কারণ আমি তাদের অনুগ্রহ করি না। আমার স্ত্রী সতর্ক করে দিয়েছেন যে, যখন আমি এই পদ ছেড়ে দেব, তখন আমি নিজেকে একা দেখতে পাব।’

প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘কিন্তু আমার আপত্তি নেই। আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে সহিংস কিছু ঘটনা নথিভুক্ত করার সময় আমি একেবারে একা ছিলাম। বিহারিদের অধিকারের পক্ষে কথা বলার সময় এবং তাদের সহ্য করা অবিচার তুলে ধরার সময় আমি মূলত একা ছিলাম। আমার জন্য, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমি ন্যায্যতা এবং ন্যায়বিচারের সঙ্গে কাজ করছি কিনা তা নিশ্চিত করা। আমি কি আমার নিয়োগকর্তাদের কার্যকরভাবে এবং ভালোভাবে রক্ষা করছি? এবং দ্বিতীয়ত, আমি কি এই প্রক্রিয়ায় কারো ক্ষতি করছি?’

নিজের জন্য চ্যালেঞ্জের কথা জানিয়ে প্রেস সচিব লিখেছেন, ‘ক্ষমতা এমনভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত করেন যা, কেউ কল্পনাও করতে পারেন না বা উপলব্ধি করতে পারেন না। আব্বাসীয় আমলে সুফিরা সরকারি পদ এড়িয়ে চলতেন, অনিশ্চিত থাকতেন যে, তারা অক্ষত থাকতে পারবেন কিনা। ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নিশ্চিত করা যে, তারা অন্যদের ক্ষতি করবেন না।’

পোস্টের শেষাংশে প্রেস সচিব লিখেছেন, ‘এখন পর্যন্ত, এটাই আমার প্রতিজ্ঞা। কয়েক মাস পরে, যখন আমি পদত্যাগ করব, তখন আমি গর্বের সঙ্গে পিছনে ফিরে তাকাতে পারব বলে আশা করি, কারণ আমি জানি আমি এই দুটি লক্ষ্য অর্জন করেছি।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.