নিজস্ব প্রতিনিধিঃ দীর্ঘ ৫ বছর কারা ভোগের পর ভারত থেকে নিজ দেশে ফিরে এসেছে কেরানীগঞ্জের শ্রী গোপীনাথ (১৬) নামের এক কিশোর।দীর্ঘ চেষ্টার পর তাকে তার পরিবারের মাঝে ফিরিয়ে দেন কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রামানন্দ সরকার। এ জন্য তার পরিবার পুলিশ সুপারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রামানন্দ সরকার সাংবাদিকদের জানান, ২০১৪ সালে পদ্ম রানী (৫০) তার দুই সন্তান নারায়ণ মাহাতো (১৬), রসায়ন মাহাতো (১৫) এবং বিনোদিনী মাহাতো (৫৫) ও তার সন্তান গোপীনাথ মাহাতো (১৬) উন্নত জীবনের আশায় দালালচক্রের মাধ্যমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পাচার হয়ে যায়। পরবর্তীতে ভারতের পুলিশ পদ্মরানী মাহাতো ও বিনোদিনী মাহাতোকে তাদের তিন ছেলেসহ গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করে। পদ্মরানী মাহাতো ও বিনোদিনী মাহাতো ১৮ মাস কারাবাস শেষে বাংলাদেশে ফেরত আসে।অপরদিকে তাদের তিন সন্তানদের বিষয়ে সন্দেহ হলে ভারতীয় পুলিশ তাদেরকে সেইফ হোমে পাঠিয়ে দেয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানা যায় যে, তাদেরকে ভারতের অবজারভেটরি হোম ফর বয়েজ, ঘূর্ণির মোড়, কৃষ্ণনগর, নদীয়ায় রাখা হয়েছে।
পরে কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হলে তারা ওই তিন ছেলের বিষয়ে একটি তদন্ত রিপোর্ট চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি রিপোর্ট পাঠানো হয়। তবে নারায়ণ মাহাতো, রসায়ন মাহাতো ও গোপীনাথ মাহাতোদের পিতা দুইজন হলেও ভুলক্রমে তাদের তিনজনের পিতার নাম স্বপন মাহাতো দেখানো হয়েছে। এতে নারায়ণ মাহাতো ও রসায়ন মাহাতো বাংলাদেশে আসলেও গোপীনাথ মাহাতো (পিতার নাম-গোবিন্দ মাহাতো) দেশে ফেরত আসতে পারে নি। পরে কলকাতার ডেপুটি হাইকমিশনার বিএম জামাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পুনরায় গোপীনাথ মাহাতোর বিষয়ে আবারো একটি তদন্ত রিপোর্ট পাঠানোর কথা বললে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আরো একটি রিপোর্ট কলকাতা হাইকমিশনে পাঠানো হয়। এতে অবশেষে গোপীনাথ মাহাতো গত ৮ই মার্চ বেনাপোল থানার মাধ্যমে বাংলাদেশে ফিরত আসে।
ঢাকার কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রামানন্দ সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দীর্ঘ ৫ বছর জেল খাটার পর ভারত থেকে নিজ দেশের মাটিতে ফিরতে সক্ষম হয় শ্রী গোপীনাথ (১৬) নামে এক কিশোর। তার বাবার নাম শ্রী গোবিন্দ। তার বাড়ি ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী থানার কমলেশ্বরদী গ্রামে। গোপীনাথ দীর্ঘ ৫ বছর পর তার পরিবারের মাঝে ফিরে আসায় তার অসহায় পরিবার কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রামানন্দ সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।