জেলা প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ত্রিবেনী ইউনিয়নের পিংকি রানি দাস (২৭) নামে এক গৃহবধূকে শারীরিক নির্যাতনের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা শ্রীকান্ত কুমার দাস শৈলকুপা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন, অভিযোগে পিংকির স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির অজ্ঞাতনামা ৬ সদস্যকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগপত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর এলাকার বাসিন্দা শ্রীকান্ত কুমার দাসের কন্যা পিংকি রানি দাসের সঙ্গে ২০১৭ সালে বিয়ে হয় শৈলকুপা উপজেলার ত্রিবেনী গ্রামের বাসিন্দা শ্রী ভগিরত দাসের ছেলে সুমন কুমার দাসের সাথে, বিয়ের পর থেকে পিংকি শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দ্বারা নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। অভিযোগে বলা হয়, বিবাহিত জীবনে পিংকির একটি ৩ বছর বয়সী কন্যা সন্তান রয়েছে, যার নাম শ্রেয়া দাসও ৮ মাস বয়সী একটা পুত্র সন্তান আছে যার নাম পার্থ।
অভিযোগে বলা হয়, ২১ মে ২০২৫ তারিখ সন্ধ্যা ৭টার দিকে পিংকিকে মারধর করা হয়। তার মাথা, পিঠ, পাঁজরসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে বাড়িতে ফেলে রাখা হয়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে প্রথমে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে একাধিকদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর অবশেষে ২৬ মে বিকেল ৫ টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের পিতা শ্রীকান্ত কুমার দাস অভিযোগ করেন, তার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার মেয়ে আমার বাড়িতে বেড়াতে আসার জন্য তার স্বামীর কাছে জামা কাপড় কিনে নেওয়ার জন্য বলে কিন্তু তার স্বামী অপারকতা করে, কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তার স্বামী লোহার রড, বাঁশের লাটি দিয়ে ,হত্যার উদ্দেশ্য বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি ভাবে পিটায়ে জখম করে
তিনি আরো বলেন বিয়ের পর থেকেই যৌতুক, সংসার, মেয়ের জন্মসহ নানা কারণে মেয়েটির উপর অমানবিক আচরণ ও নির্যাতন চালানো হতো। আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা ন্যায়বিচার চাই। আমার নাতনি এখন মাতৃহীন। আমি চাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।
লিখিত অভিযোগে পিংকির স্বামী সুমন কুমার দাস ছাড়াও অভিযুক্ত করা হয়েছে শ্বশুর শ্রী ভগিরত দাস, রামকৃষ্ণ সহ অজ্ঞাতনামা দুই থেকে তিনজনকে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খাঁন জানান,আমরা একটা অভিযোগপত্র পেয়েছি ইতোমধ্যে তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রতিবেশী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বলেন, পিংকি শান্ত স্বভাবের, নম্র ও পরিবারকেন্দ্রিক একজন মানুষ ছিলেন। তার সঙ্গে এমন নৃশংস আচরণ অত্যন্ত দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। তারা অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন।