ঢাকাশুক্রবার , ৩১শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  1. English Version
  2. অন্যান্য
  3. অপরাধ
  4. অর্থনীতি
  5. আইন-আদালত
  6. আবহাওয়া
  7. আর্ন্তজাতিক
  8. ঈদ
  9. উপ-সম্পদকীয়
  10. করোনা ভাইরাস আপডেট
  11. খুলনা
  12. খেলাধুলা
  13. চট্টগ্রাম
  14. চাকরীর খবর
  15. জনদূর্ভোগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রেলপথে রংপুরের মানুষের দুর্ভোগ, টিকিট পেতে যুদ্ধ ‎

News Editor
অক্টোবর ২৪, ২০২৫ ১২:০২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

প্রায় দেড়শ বছরের পুরোনো রেল স্টেশন রংপুর। বর্তমানে বিভাগীয় রেল স্টেশন। নামের ভার বেড়েছে কিন্তু উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এখানে বহু বছর। রেলযাত্রায় বাড়েনি ট্রেনের সংখ্যা। এ কারণে নিত্যদিন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রীরা। জেলার মানুষের কাছে ট্রেনের টিকিট এখন যেন সোনার হরিণ। যাত্রী চাহিদার ২০ ভাগ টিকিটও দিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। অনলাইন ও কাউন্টার দুই মাধ্যমেই টিকিট পেতে হয় যুদ্ধ করে।

রংপুর থেকে ঢাকাগামী একমাত্র ট্রেন রংপুর এক্সপ্রেস। এ ছাড়া কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস যাত্রাবিরতি দেয় রংপুরে। প্রতিদিন রংপুর এক্সপ্রেস ও কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস গড়ে সাড়ে ৬শ যাত্রী বহন করে। কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসে রংপুরের জন্য আসন সংখ‍্যা বরাদ্দ মাত্র ১৫৪টি। আর রংপুর এক্সপ্রেসে বরাদ্দ ১৯৯টি। দুটি ট্রেনেই টিকিট পাওয়া যেন ভাগ্যের ব্যাপার হয়ে উঠেছে। ‎

যাত্রীরা বলছেন, চাহিদার ২০ ভাগ টিকিটও দিতে পারছে না রেল কর্তৃপক্ষ। এতে দিন দিন বাড়ছে ভোগান্তি। সমস্যা সমাধানে ট্রেন ও বগির সংখ্যা বাড়ানোর দাবি যাত্রীদের।

১৮৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত রংপুর রেলওয়ে স্টেশনে একবার মাত্র দায়সারাভাবে উন্নয়ন কাজ হয়েছিল ১৯৪৪ সালে। এরপর ৮০ বছর পেরিয়ে গেলেও বিভাগীয় শহর হিসেবে রংপুরের এই স্টেশনটির দৃশ্যমান আর কোনো উন্নয়ন হয়নি। 

‎রংপুর থেকে রেলপথে ঢাকায় যাবেন নূর মোহাম্মদ। টিকিট কাটতে তিনি এসেছেন রংপুর রেলওয়ে স্টেশনে। ষাটোর্ধ্ব এই রেলযাত্রী
বলেন, আমরা সবসময় কষ্ট করে যাতায়াত করি। কাউন্টারে এলে বলে কোনো টিকিট নাই, অনলাইনে কাটেন। আমার মতো সাধারণ মানুষ তো অনলাইনে টিকিট কাটতে পারবে না। আমি এসব বুঝিও কম। তাহলে আমি কোথায় যাবো, কার কাছে টিকিট চাইব? আমাদের এই কষ্ট দেখার কেউ নাই।

স্থানীয় বাসিন্দা কামরুল হাসান বলেন, বিভাগীয় স্টেশন আছে। কিন্তু এখানে কোনো বিভাগীয় কার্যক্রম নেই। আরও একটি ট্রেন বাড়িয়ে কাউন্টারে টিকিট বিক্রি শুরু করলে খুব ভাল হবে। নয়তো এই ভোগান্তি থেকেই যাবে।

মুনমুন রহমান নামে আরেক যাত্রী বলেন, এখানে পদে পদে যাত্রীদের ভোগান্তি। স্টেশনের অবস্থাও বেহাল। নেই যাত্রী ছাউনি। পারাপারে নেই ফুটওভার ব্রিজ, দ্বিতীয় প্ল্যাটফর্মে যাতায়াতের ব্যবস্থা নেই। এমনকি স্টেশনটির বাউন্ডারি ওয়ালও নেই। কাউন্টারে টিকিট পেতে কষ্ট করতে হয়। অনলাইনে তো সমস্যার শেষ নেই। আমরা বারবার শুনি, রংপুর রেল স্টেশনের উন্নয়ন হবে, ট্রেনের সংখ্যা বাড়বে। কিন্তু অজানা কারণে আমরা উন্নয়ন থেকে বঞ্চিতই থেকে যাচ্ছি।

ট্রেনের নিয়মিত যাত্রী মোখলেছুর রহমান বলেন, অনলাইনে টিকিট কাটতেও নানা ভোগান্তি। আগেই বুকিং হয়ে যায়, নয়তো সিন্ডিকেট করে কেটে রাখে। কখনো কখনো নেটওয়ার্ক সমস্যায় পড়তে হয়। আমরা কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছি না।

রংপুরের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, রংপুরবাসীর দীর্ঘদিনের নানা দাবি থাকা সত্ত্বেও রেল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা অত্যন্ত হতাশাজনক।

রংপুর বিভাগ উন্নয়ন আন্দোলন পরিষদের আহ্বায়ক ওয়াদুদ আলী বলেন, ১৮৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত রংপুর রেলওয়ে স্টেশনে একবার মাত্র দায়সারাভাবে উন্নয়ন কাজ হয়েছিল ১৯৪৪ সালে। এরপর ৮০ বছর পেরিয়ে গেলেও বিভাগীয় শহর হিসেবে রংপুরের এই স্টেশনটির দৃশ্যমান আর কোনো উন্নয়ন হয়নি।

রংপুর মহানগর নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব ‎পলাশ কান্তি নাগ বলেন, রেল কর্তৃপক্ষ ও মন্ত্রণালয় বরাবরই উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা মনে করি যোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিকায়নের জন্য রেলকে ঢেলে সাজানো উচিত।

তিনি আরও বলেন, উত্তরের কোটি মানুষের ট্রেন যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন রংপুর। অন্য লাইনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন স্থাপন হলেও রংপুর সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আমরা আর বৈষম্যের শিকার হয়ে থাকতে চাই না। দ্রুত রংপুর রেলওয়ে স্টেশনের সংস্কার করে আধুনিকায়ন করাসহ এই‌ স্টেশনের ওপর দিয়ে নূন্যতম আরও দুটি আন্তঃনগর ট্রেন বরাদ্দ এখন সময়ের দাবি।

নাগরিক সমাজের এ প্রতিনিধিরা বলছেন, দেশ যখন মেট্রোরেলের যুগে প্রবেশ করেছে, তখন উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বড় শহর রংপুরের রেলসেবা সীমাহীন দুর্ভোগের আরেক নাম হয়ে আছে। ট্রেন সংখ্যা বাড়ানোর ক্ষেত্রে বরাবরের মতোই উদাসীন রেল কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থার অবসান দরকার।

‎রংপুর রেলওয়ে স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেনডেন্ট আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, রেলের টিকিট এখন অনলাইনেই কেটে নিতে হবে। ঢাকাগামী ট্রেনের টিকিট ১০ দিন আগে থেকে বিক্রি শুরু হয়। যেহেতু শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে সেখানে রংপুরবাসীর জন্য আলাদা করে করার কিছু নেই। আমরা সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা হয়ত ব্যবস্থা নেবে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন সূত্র থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।